🛕 জগন্নাথ রথযাত্রার কিছু আশ্চর্যজনক তথ্য 🌼 প্রণাম মন্ত্র ও স্তোত্রম

 

জগন্নাথ রথযাত্রা হল প্রধানত ওড়িশার পুরীতে পালিত এক মহা উৎসব। প্রতি বছর আষাঢ় মাসে এই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। লক্ষ লক্ষ ভক্তের অংশগ্রহণে এই উৎসব যেন ভক্তির এক মহাসমুদ্রে পরিণত হয়।

🌟 আশ্চর্যজনক ১০টি তথ্য:

1️⃣ তিন ভ্রাতৃ-ভগ্নীর রথ – জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার জন্য তিনটি আলাদা রথ তৈরি হয় – যার নাম যথাক্রমে নন্দিঘোষ, তালধ্বজ, ও দর্পদলন।

2️⃣ প্রতি বছর নতুন রথ – প্রতি বছরই রথগুলি নতুন কাঠ দিয়ে তৈরি হয়। একবার ব্যবহার করা কাঠ আবার ব্যবহার করা হয় না।

3️⃣ দর্শন নয়, অংশগ্রহণ – অন্য মন্দিরে দর্শন করা যায়, কিন্তু পুরীর রথযাত্রায় ভগবান নিজেই রাস্তায় আসেন – যেন তিনি নিজেই ভক্তদের কাছে যান।

4️⃣ বিশ্বের বৃহত্তম রথ উৎসব – এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাকা-চলিত ধর্মীয় উৎসব, যেখানে দেশ-বিদেশ থেকে কোটি ভক্ত সমবেত হন।

5️⃣ নেই চোখের দৃষ্টি, তবুও সর্বজ্ঞ – জগন্নাথদেবের চোখ বড় বড় হলেও পুরো নয়, তবুও তিনি সব কিছুই দেখেন – কারণ তিনি ‘অনন্ত’ ও ‘সর্বত্র’।

6️⃣ রথ টানার আগে দড়ি ছিঁড়ে যাওয়া – প্রায় প্রতি বছরই রথ টানার দড়ি প্রথমে ছিঁড়ে যায়। ভক্তরা মনে করেন এটি একটি অলৌকিক সংকেত।

7️⃣ গুন্ডিচা যাত্রা – এই উৎসব ৯ দিন ধরে চলে। প্রথমে মন্দির থেকে বেরিয়ে জগন্নাথদেব যান তাঁর মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরে, পরে আবার ফিরে আসেন।

8️⃣ পবিত্র ‘মহাপ্রসাদ’ – রথযাত্রার সময় হাজার হাজার মানুষ ভাগ করে খান ‘মহাপ্রসাদ’, যা ভগবানের রান্না করা খাবার।

9️⃣ বৃষ্টি হলেও বন্ধ হয় না রথযাত্রা – বৃষ্টি, ঝড় বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ – কিছুই রথযাত্রাকে থামাতে পারে না।

🔟 রথযাত্রার ইতিহাস বহু প্রাচীন – স্কন্দ পুরাণ ও ব্রহ্ম পুরাণে এই রথযাত্রার উল্লেখ পাওয়া যায়।

🙏 জগন্নাথদেবের প্রণাম মন্ত্র 🙏

“নমঃ জগন্নাথায়”

“জগন্নাথঃ স্বামী নয়ন পথ গমো ভবতু মেঃ”

“দেব জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা দেবীর চরণে কোটি কোটি প্রণাম।”

🕉️ শ্রী জগন্নাথ স্তোত্রম্ 

কদাচিৎ কালিন্দীতট-বিপিন-সঙ্গীতক-রবো

মুদাভীরীনারী বদনকমলাস্বাদ-মধুপঃ।

রমাশম্ভুব্ৰহ্মাসুরপতিগণেশার্চ্চিতপদো

জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে॥১॥

ভুজে সব্যে বেণুং শিরসি শিখিপিচ্ছং কটিতট

দুকূলং নেত্ৰান্তে সহচর-কটাক্ষং বিদধতে।

সদা শ্ৰীমদ্বৃন্দাবন বসতি লীলা পরিচয়ো

জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে॥২॥

মহাম্ভোধেস্তীরে কনকরুচিরে নীলশিখরে

বসন্‌ প্রাসাদান্তে সহজবলভদ্ৰেণ বলিনা।

সুভদ্ৰামধ্যস্থঃ সকলসুরসেবাবসরদো

জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে॥৩॥

কৃপাপারাবারঃ সজলজলদশ্রেণিরুচিরো

রমাবাণী রামঃ স্ফুরদমলপদ্মেক্ষণমুখৈঃ।

সুরেন্দ্রৈরারাধ্যঃ শ্রুতিগণ শিখাগীতচরিতো

জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে॥৪॥

রথারূঢ়া গচ্ছন পথিমিলিত ভূদেবপটলৈঃ

স্তুতি প্ৰাদুৰ্ভাবং প্রতিপদমুপাকর্ণ্য সদয়ঃ।

দয়াসিন্ধুর্বন্ধু সকলজগতাংসিন্ধুসদয়ো

জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে॥৫॥

পরব্রহ্মাপীড়্যং কুবলয়দলোৎফুল্ল নয়নো

নিবাসী নীলাদ্রৌ নিহিতচরণোহনন্ত শিরসি।

রসানন্দো রাধাসরসবপুরালিঙ্গন সুখো

জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে॥৬॥

ন বৈ যাচে রাজ্যং ন চ কণকমাণীক্যবিভবং

ন যাচেহহং রম্যাং সকলজনকাম্যাং বরবধূম্‌।

সদা কালে কালে প্ৰমথপতিনা গীতচরিতে

জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে॥৭॥

হর ত্বং সংসারং দ্রুততরমসারিং সুরপতে

হর ত্বং পাপানাং বিততিমপরাং যাদবপতে।

অহো! দীননাথং নিহিতমচলং নিশ্চিতপদং

জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে॥৮॥

জগন্নাথাষ্টিকং পুণ্যং যঃ পঠেৎ প্ৰযতঃ শুচিঃ

সৰ্ব্বপাপ বিশুদ্ধাত্মা বিষ্ণুলোকং সগচ্ছতি॥৯॥

🔔 এই স্তোত্র পাঠ করলে ভক্তির সঙ্গে সঙ্গে মানসিক শান্তিও লাভ হয়।

📿 ভক্তিভরে রথ টানুন, হৃদয়ে ভগবানকে স্থান দিন

এই রথযাত্রা শুধু এক ধর্মীয় উৎসব নয় – এটি এক আত্মিক যাত্রা, যেখানে ঈশ্বর নিজেই আমাদের কাছে আসেন।

চলুন আমরা সকলেই বলি:

"জয় জগন্নাথ! 🙏"